অনলইন ডেস্ক: “আপনি মুখ বন্ধ রাখুন। যদি গঠনমূলক কিছু না বলতে পারেন, তাহলে এই পরিস্থিতিতে দয়া করে আপনার মুখ বন্ধ রাখাটাই শ্রেয়! দেশের যুব সম্প্রদায়, শিশু-মহিলাদের সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন আপনি। তাই আপনাকে বলব, মুখ বন্ধ রাখতে…” মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশে ঝাঁজালো মন্তব্য হিউস্টনের এক পুলিশ আধিকারিকের। একবিংশ শতকেও দুনিয়ার প্রাচীনতম গণতন্ত্রের এক তাৎপর্য দিকই বটে! যেখানে আক্ষরিক অর্থে ‘গণতান্ত্রিক’ অধিকার আদায়ে কিংবা ন্যায্য কথা বলতেও শাসকের চোখরাঙানির তোয়াক্কা করেন না পদাধিকারীরা।
প্রসঙ্গত দিন কয়েক ধরেই কৃষাঙ্গ খুনের প্রতিবাদে জ্বলছে আমেরিকা। দোকানপাঠ ভাঙচুর-লুঠপাট, হোয়াইট হাউস চত্বরের বাইরে ফুঁসতে থাকা প্রতিবাদীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া তথা আন্দোলনকারী এবং পুলিশি তরজা, এতকিছু সত্ত্বেও প্রতিবাদ থেমে থাকেনি। করোনা সংক্রমণের তালিকায় বিশ্বের শীর্ষে ঠাঁই পেলেও প্রাণের ভয়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওরা রাস্তায় নেমেছে। এই অচলায়তনের মাঝেই দেশের পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে তোপ দেগে ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন, “এখনও যদি আপনারা এই প্রতিবাদীদের ঠান্ডা না করতে পারেন, তাহলে নিজেদের সময় নষ্ট করছেন। কর্তৃত্ব জাহির করতে শিখুন…।”
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের জেরেই পালটা গর্জে উঠেছেন হিউস্টনের সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিক। তাঁর কথায়, “এটি আধিপত্য বিস্তারের সময় নয় কিংবা কর্তৃত্ব ফলানোরও সময় নয়। ওদের পাশে দাঁড়িয়ে আশ্বস্ত করে মন জয় করাটাই এখন মূল কাজ। আপনি সদর্থক কিছু বলতে না পারলে নিজের মুখ বন্ধ রাখুন।” আর হিউস্টনের সেই পুলিশ আধিকারিকের মন্তব্যেই জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে নেটদুনিয়ায়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রাম আর নির্বাচনে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে বিএনপি জনগণের কাছে যেতে ভয় পায়। তাই জনগণ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে গণমাধ্যমে চর্বিত চর্বন করছে। দুর্যোগকালে অসহায় মানুষের পাশে না থেকে, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে থেকে দূরে অবস্থান করে, নিজেদেরকে জনরোষ’ থেকে বাঁচাতে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বব্যাপী শেখ হাসিনা সরকারের সংকট সমাধানে সাহসী ও মানবিক প্রয়াস প্রশংসিত হচ্ছে। আর বিএনপি খুঁজে পাচ্ছে সমন্বয়হীনতা।নিজেরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে নির্লজ্জভাবে ব্যর্থ হয়ে, দায়িত্বহীন বক্তব্য রাখছে। বিষোদগার করছে যা প্রকারন্তরে ফ্রন্টলাইন যোদ্ধার ও আক্রান্তদের মন বল নষ্ট করছে। আমি তাদের দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এটা তাদের উদ্দেশ্য মূলক অপপ্রচার। যা মানসিক বৈকল্য ছাড়া আর কিছুই নয়। যে দলের নেতাদের মধ্যে সমন্বয় নেই। নিজেদের অফিসে নিজেরা আগুন দেয়, কর্মীরা নেতাদের পেটায়। তারা সমন্বয়ের য কথা বলে। এদেশে দুর্যোগে গণমানুষের পাশে সবার আগে আওয়ামীলীগ ছুটে যায়। এটাই আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। আর নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে হাতের তালু দিয়ে আকাশ ঢাকার অপচেষ্টা আর মিথ্যাচার বিএনপি’র ঐতিহ্য।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার সংকটের শুরু থেকেই সকল দফতর ও সংস্থার সাথে সমন্বয় গড়ে তুলে; সংক্রমণ রোধে আক্রান্তদের চিকিৎসা, টেস্ট ক্যাপাসিটি বৃদ্ধিসহ ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আকস্মিক এই সংকট মোকাবেলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। আমরা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দিন দিন সংকট সমাধানে সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। সমন্বয় গড়ে তোলা হয়েছে কেন্দ্র থেকে উপজেলা পর্যন্ত।। চিকিৎসা নেটওয়ার্ক সমন্বয় করাসহ, সচেতনতা তৈরিতে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে সরকার। খাদ্য সহায়তা, আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ নানান উদ্যোগের ফলে আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত একজন মানুষ না খেয়ে মরে নি।’
সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, করোনা সংক্রমণ রোধের স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন খালি রেখে গাড়ি চালনায় সরকার ভাড়া সমন্বয় করেছে এবং আজ থেকে শর্ত সাপেক্ষে গণপরিবহন চলবে। আমি মালিকদের স্বাস্থ্যবিধি এবং শর্ত মেনে গাড়ি চালনার অনুরোধ করছি। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ভিজিল্যান্স টিম, মোবাইল কোর্ট সহ টার্মিনাল কর্তৃপক্ষকে অর্ধেক আসন খালি রাখা বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক পরিধানের বিষয় তদারকি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাশাপাশি যাত্রী সাধারণকে অনুরোধ করছি, আপনারা অতিরিক্ত যাত্রী হবেন না। অর্ধেক আসন খালি রাখুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে টিকিট কাটুন। নিজে সংক্রমণ থেকে বাঁচুন। অপরকে বাঁচান। বাড়তি যাত্রী হওয়া, স্বাস্থ্যবিধি না মানা দেশকে আরও সংকটে নিমজ্জিত করতে পারে। আমি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপনের অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের অসচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পরিস্থিতি যদি আরো অবনতি হয় তাহলে জনস্বার্থে সরকার আবারো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক পর্যায় তবুও লকডাউন শিথিল করেছে। কোথাও তুলে নিয়েছে। পবিত্র মক্কা, মদিনা এবং মসজিদুল আকসা ও ধীরে ধীরে মুসল্লিদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।’
‘জীবনের পাশাপাশি জীবিকা দীর্ঘমেয়াদি বন্ধ থাকলে জীবনের গতিপথে নেমে আসবে স্তব্ধতা। অর্থনীতি হয়ে পড়বে স্থবুর। তাই পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বেছে নিতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ প্রেক্ষাপটে আমাদের অনিবার্য প্রয়োজন সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। নিজের সুরক্ষা, পরিবার, সমাজেরও সুরক্ষা দিতে হবে। তাই প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থানে সচেতন থাকি। সংকটে সাহসী নেতৃত্ব আমাদের সকলের পাশে আছেন। তিনি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তার প্রতি আস্থা রাখুন, ভরসা রাখুন। মহামারির এ দিন আমরা কাটিয়ে উঠব। ভোরের আলোয় আলোকিত হবে দশদিগন্ত। ইনশাল্লাহ।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
2020 topbanglanews24